চন্দ্রবিন্দু নয়, চন্দ্রবিন্দু নয় — বাংলা Transcript

Triangular Vishon
19 min readMay 15, 2020
আমরা যেগুলো নিয়ে কথা বলেছি সেগুলো এখানে পেয়ে যাবে।

“চন্দ্রবিন্দু নয়” album কবে release করেছিল তোর মনে পড়ছে?

আমরা বোধহয় তখন কলেজে পড়ি, Third year মনে হয়। আমি তো বোধহয় Internet ঘেঁটেই দেখেছিলাম। আর চিংড়িঘাটাতে মনে হয় একটা hoarding দেখেছিলাম যেটা ওই “চন্দ্রবিন্দু নয়” আসছে, এরকম একটা আভাস দিচ্ছে। কিন্তু আমি surely বলতে পারব না।
তুই কি করে জানলি?

সেটাতে কোনো mention করা কিছু ছিল না?

না, সেটাতে কিছুই ছিল না। “নয়” আসছে এরকম গোছের কিছু একটা ছিল। পরে হয়তো ভেবেছিলাম, হতে পারে ওটা “চন্দ্রবিন্দু নয়” এর।

হ্যাঁ, আমার কাছে, চন্দ্রবিন্দু নতুন album করছে, “চন্দ্রবিন্দু নয়” সেই album-এর নাম, সেটা জেনেছি একটা এবিপি আনন্দ এর — তখন এবিপি ছিল কিনা জানিনা, স্টার আনন্দ ছিল বোধহয়, তার promotion-এ। ওদের band member-রা ছিল — উপল, অনিন্দ্য এরা ছিল। ওরা নতুন album করছে, album এর cover-টা কি রকম হবে? তার কি ছবি? সেই ছবিটা নিয়েও কথাবার্তা হয়েছিল। একটা ছবি ছিল যে একটা নয়(৯)-এর মত দেখতে আশ্চর্য একটা জীব। তার সামনে একটা পিঁপড়ে। সেই পিঁপড়েটা ওই নয়টাকে দেখে খুব হকচকিয়ে গেছে। স্বাভাবিক প্রশ্ন করছে, “এই রকম একটা cover কেন হল?”। তখন উপলই বোধহয় explain করছিল কারণ ও যেহেতু ছবিটা এঁকেছে, আর কি, ওই নয়টা এমন একটা নতুন জিনিস — এতটাই নতুন, সেটা দেখে পিঁপড়েটা খুব অবাক হয়েছে।
এটা ওই interview-তেই শুনেছিলাম।
বোধহয় “চন্দ্রবিন্দু নয়” album-টা, আগের album-এর থেকে বেশ কয়েক বছর বেশি সময় নিয়েছিল মাঝখানে, বোধহয় চার বছরের সময় ছিল।
তখন ওখানেও জিজ্ঞেস করছিল যে, “তোমাদের এই album-টা যে বেরোলো, এর পরের album কতদিন বাদে বেরোবে?”।
অনিন্দ্য বোধহয়, যেমন মজা করে বলে, বলছে যে, “ওই চার বছর বাদে বাদে যেমন World Cup হয়, সে মতই বোধহয় হবে!”
এটা আমার কাছে প্রথম “চন্দ্রবিন্দু নয়” আসছে।
তার সাথে গান শোনার কথার দিকে যদি মনে হয়, “চন্দ্রবিন্দু নয়”-এর গান কোথায় প্রথম শুনেছি? ওটা বিশেষ অনুষ্ঠান‌ একটা ছিল। সে বছর সুনীল গাঙ্গুলী মারা গিয়েছিলেন।
তার একটা স্মরণসভার মত অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য invited ছিল।
ও stage-এ উঠে, সুনীল গাঙ্গুলীকে নিয়ে কিছু বলতে গিয়ে একটা গান গেয়েছিল। গানটার নাম আমি পরে জেনেছিলাম। গানটার কথাটা আমার খুব — প্রথম যে লাইনটা, সেটা আমার খুব মনে আছে এখনো।
“সে গিয়েছে বনে, গোপনে আনমনে”।
গানটা obviously ও একদম খালি গলায় গেয়েছে। কোনো instrument নেই। কিন্তু গানটা আমার কাছে খুব পৌঁছে ছিল। এবং অনুষ্ঠানটার সাথে ভীষণ connected মনে হয়েছিল। তারপর album-টা যখন আমি শুনি detail-এ, “আধখানা আদর” গানটার নাম। ওই গানটা তখনকার জন্য, বেশ ভালো লেগেছিল। ওই particular গানটা। তারপর যেটা হয়, চন্দ্রবিন্দু album তৈরি করছে, আমি গানগুলো প্রথমবার যখন শুনেছি, তখন যেটা হয়েছে, যে album আগে শুনে এসেছি, চন্দ্রবিন্দু সম্বন্ধে যে expectation, গানগুলো আমার কাছে খুব- এমন কিছু fascinating মনে হয়নি। যেটা মনে হয়েছে যে এখানের ব্যাপারটা একটু অন্যরকম হয়েছে। কিন্তু actually কতটা- আমি নতুন করে কি পাচ্ছি, সেটাকে আমি খুব তাড়াতাড়ি নিজে cultivate করতে পারিনি। পরে গিয়ে আবার শুনেছি। বছর বেশ কয়েক তো হয়ে গেল, তার পরে পরে যখন শুনেছি, তখন আবার আমার কাছে কিন্তু ব্যাপারগুলো এসেছে। যে “হ্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছি”, “আচ্ছা এই বিষয়গুলো ছিল album-টার ভেতর”। প্রথমবার পারিনি।
খুব স্বাভাবিকভাবেই আমাদের বোধহয় তাই হয়ে থাকে যে
প্রথমবার কোনো একটা খুব ভালো জিনিসও যদি হয়, সেটা শুনেই কি প্রথমবারেই আমাদের খুব চমৎকার লেগে যায়? বেশ কয়েকবার শুরুতে শুনতে হয়। আমার তো তাই মনে হয়।

তুই তো কিছুদিন পরে বোধহয় আবার শুনলি, কিছুদিন আগেই মনে হয়?

তখন কিন্তু অন্যরকম কিছু লেগেছে। বিষয়গুলো বোধহয় আমার কাছে আরো পরিস্কার হয়েছে।

বয়সের সাথে সাথেই অনেক সময়, আমাদের অনেক taste পাল্টে যায়। আর সেও বলতে গেলে যে চন্দ্রবিন্দুর নিজেরও as a band, অনেক বছর হয়ে গেছে। আর চন্দ্রবিন্দু এমন একটা band যার বোধহয় core value-তে বন্ধুত্ব আছে।

এটা কিন্তু আমার মনে হয় সেই সময়ের অনেক ব্যান্ড হয়েছে তো, তাদের মধ্যেও কিন্তু বন্ধুত্বের ব্যাপারটা ভীষণ ছিল। একটা ব্যান্ড তৈরি হতে গেলে বন্ধুত্ব থাকতে হবে না? একসঙ্গে এতজন music করছে! সে ধর, আমি নাম করে বলতে পারি, ভূমি ব্যান্ডের মধ্যে, সুরজিৎ — সৌমিত্রর সেই চমৎকার chemistry ছিল। আমরা গানেও সেগুলো পেয়েছি। চমৎকার করত!
এদের (চন্দ্রবিন্দুর) মধ্যে ওই individuality-টা খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন হয়। band-এর performance যখন হয়। যখন cinema-র কাজ করছে, সেক্ষেত্রে কিন্তু আমরা জানি। কিছু কিছু সিনেমায়, অনিন্দ্য আর চন্দ্রিল একসাথে গান লিখেছে। সেটা identified হয়েছে। ওরা জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছে “অন্তহীন”(২০০৯) এর জন্য। সেগুলো কিন্তু আমরা চন্দ্রবিন্দু নয় এটা জানি। চন্দ্রবিন্দুর গান নয়, দুজনের নিজস্ব কাজ। সেটা আমরা বুঝতে পেরেছি। কিন্তু যখন band perform করে, মানে চন্দ্রবিন্দুর গান যখন আসে, তখন কিন্তু সত্যি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়, কার কোনটা contribution, এতটা blended!

আর, ওরা যখন live performance-ও করে, চন্দ্রিল তো এমনিতে খুব বেশি live-এ থাকে না, এবার শুধু “চন্দ্রবিন্দাস” বলে ওদের একটা video album ছিল। সেখানে “এমনও বসন্ত দিনে” গানটা। সেখানে রাজার পাঠ করছে চন্দ্রিল, আর সেখানে বাকি সব side character-গুলোর পাঠ একাই করে যাচ্ছে দ্রোণ। সেটা দেখে একটা আশ্চর্য রকম মজা!

হ্যাঁ, চন্দ্রবিন্দু কে ভালো লাগার পেছনে এটা সবচেয়ে বড় কারণ। চন্দ্রবিন্দুর গান আসার পর, আমার মনে হয় ওরকম গান হতে পারে এটা আমার কাছে জানা ছিল না। বহুক্ষেত্রে মনে হয়েছে। বিশেষ করে গানের কথায়।
গানের কথাগুলো এতটা strong এবং এমন এমন শব্দ, এমন আটপৌরে কথাবার্তা, সেগুলো গানের lyric হয়ে গিয়েছে। চন্দ্রবিন্দু যখন গান বানাচ্ছে তার আগে কিন্তু এই “জীবনমুখী” গান, মানুষের রোজকার জীবন নিয়ে গানের, আশ্চর্য ভালো কিছু গান হয়ে গিয়েছে‌। কবির সুমনের কথা যেখানে বলতেই হয়। তাও মনে হয় আমি যেটা আমার নিজের experience বলছি, চন্দ্রবিন্দুর যখন গানগুলো বেরোচ্ছে, প্রথম দিকের গান, সেই গানগুলো যখন ছেলেপিলেরা শুনছে, তখন senior মানুষজনের কাছে যখন এই গানগুলো পৌঁছেছে, তারা কিন্তু ভীষণভাবেই বেঁকা চোখে দেখেছে।
“এ কী গানের ভাষা?”
“এ গানের ভাষা হতে পারে নাকি?”
“এগুলো গান হয়নি বাপু!”

“ধুর! ব্যান্ড!” *ঠোঁট উল্টিয়ে*

সেটা হয়েছে, আমি সেটা শুনেছি। আমাকে নিজেকে শুনতে হয়েছে। কিন্তু সেই জায়গাটা- এখন যখন আমি দেখি, এখনকার গানগুলো যখন শুনি, এখনকার কিরকম গান হচ্ছে সেইগুলোর বিষয় আলাদা। কিন্তু গানের ভাষাতে ওই আটপৌরে জিনিসপত্র, রোজকার জিনিসপত্র, খুব স্বাভাবিক ভাবে এসে গেছে। এবং শ্রোতারা, পুরনো শ্রোতা, যাই হোক, তারা কিন্তু জেনে গেছে যে এখনকার গানে এই ধরনের কথাবার্তা থাকবে। কিন্তু চন্দ্রবিন্দু যখন গান করছে তখন কিন্তু ওরা এই জিনিসটাকে সাবলীলভাবে করেছে, খুব confidence-এর সাথে করেছে। যেটা আমার কাছে খুব খুব interesting মনে হয়। গানের ভাষা, গানের এই বিষয় — ভাষার সাথেও বিষয়, সবক্ষেত্রেই কিন্তু stereotype ভেঙেছে।

একটা গান ছিল, যেটা মনে হয় live-এ perform করা সম্ভব নয় তার কারণ হচ্ছে অনেক processing করে ওই গানটা বানানো হয়েছে। সেটা হচ্ছে “আইকম বাইকম” বলে “জুজু”-তে একটা গান ছিল। সেখানে হঠাৎ করে English rap চলে আসছে, এটাও কিন্তু খুব নতুন ছিল ব্যাপারটা।
আরো যেটা নতুন, তুই কিছুক্ষণ আগে বলছিলি, ওদের বিষয়টা।
আমি যেটা বুঝেছি, ওদের গানগুলোর মধ্যে যে কিছু কিছু cultural reference, সেগুলো খুব popular culture হতে পারে আবার প্রচন্ড unpopular culture হতে পারে। সেগুলো এসেছে।
কিছু কিছু গানে একদম direct এসেছে যেমন Joan of Arc-এর কথা বলা আছে “ঝিলমিল” গানে। আবার কিছু কিছু আছে যেগুলো আশ্চর্য ভাবে subtext-এ বুঝে নিতে হবে।
“আচ্ছা, সেই ব্যাপারে বলেছে!”
যেমন একটা জায়গাতে, Salvador Dali-র আঁকা নিয়ে একটা গানে একটা ছোট্ট reference ছিল।
আরো একটা জায়গায়, একটু যেটা বুঝে নিতে হবে, সেটা হচ্ছে — জীবনানন্দ দাসের মারা যাওয়ার যে ঘটনাটা। সেটা “ভালো লাগে না” বলে একটা গান ছিল, সেই গানটার মধ্যে ঢুকে গেছে। এই ছোট ছোট cultural reference-গুলো —

বলেছেও খুব সুন্দর করে।
বলছে, “কবির রক্ত চাটে শহরের ট্রাম”।
এইটা যে শুনছে,
এটা প্রথমবার যখন শুনছে, “গানটার মধ্যে এলো কেন হঠাৎ করে ?” সেখান থেকে কেউ যদি খুঁজতে চায়, সে জানতে পারবে জীবনানন্দ দাস সম্বন্ধে — জীবনানন্দ দাস সম্বন্ধে চন্দ্রবিন্দুর গান শুনে জানতে হবে এরকম বলছি না। কিন্তু এই reference-টা। এটা চলে এসেছে।
তার সাথে আর একটা গান, বোধহয় “মঙ্গলগ্রহ” গানটা। সেটায় একটা বিষয় এসেছে — Perestroika। আমি যখন প্রথম শুনছি, আমি শব্দটা শুনলাম, আমার কাছে কিচ্ছু idea নেই। কিন্তু এই শব্দটা শুনে আমি, “Perestroika-টা কি? কি বিষয়? খায় না মাথায় দেয়?” ভেবে আমি খুঁজতে গেলাম। এটাকেই তুই বলতে চাইছিস। এই জিনিসগুলোকে। আমাদের cultural দিক থেকে একেবারে সাংঘাতিক উঁচু কিছু পৌঁছে দিতে হবে এরকম নয় কিন্তু reference-গুলো আছে। এটা কিন্তু আমি সত্যিই চন্দ্রবিন্দুর গানের মধ্যে এই জিনিসগুলো খুব পাই।

কেউ চাইলে ওটা avoid করতেই পারে। এই যে প্রবণতাটা, এটা বোধহয় চন্দ্রিলেরই বেশি আছে। যেমন ওর অনেক কাল আগে একটা short film ছিল
“Y2K”(২০০০) বলে এবং সেইখানে অনেক reference আছে।

আমি short film-টা দেখেছি!

ওখানে main character-টাকে শিলাজিৎ-এর character গালাগাল করছে, কোনটা culture আর কোনটা নয় “সেটা কে ঠিক করে দেবে? তোমার মত আঁতেলরা? যারা শালা film festival-এ uncut ছবি দেখে, বাথরুমে গিয়ে বলে, ‘আমি ফেলিনি!’?”। এইবার এইটা যে Federico Fellini-কে নিয়ে বলা হয়েছে, যে বুঝবে না সে এটা একটা নোংরা joke হিসেবে মজা নেবে। যে বুঝতে পারবে, সে বলবে, “আচ্ছা!”। ভীষণ witty এই জায়গাটা।

Exactly! যারা সত্যিকারের ওই ধরনের — আমার ভাবনা চিন্তা যে আমি ওই রকম ছবিই দেখি, আমার ওই রকমই choice, তাদেরকেও কিন্তু point করছে। Humor-টা সবাইকে নিয়ে, এটা খুব interesting।

আর একটা যেটা আমি দেখেছি, কিছু কিছু নাম, proper noun, এমনি এমনি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। একটা সিনেমা ছিল, কোনো দরকারই নেই Pablo Neruda-কে আনার, ওই scene-টার মধ্যে বা ওই dialog-টার মধ্যে। ঢুকে গেছে! এবার আরো একটা গান ছিল যেটাতে এটা বদমায়েশি করে করা হয়েছে। এটা চন্দ্রবিন্দুর গান নয়। এটা Billy Joel-এর একটা গান ছিল, “We didn’t start the fire” বলে। সেখানে পরপর proper noun।

হ্যাঁ, আসলে এই বিষয় নিয়ে আমার personal একটা opinion আছে।
মানে জিনিসটারই তো কোনো দরকার নেই।
তাই শিল্পের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক জিনিসও আসতে পারে। সেই ভাবেই হয়তো এসেছে।
কিন্তু এদের (চন্দ্রবিন্দু) কাছে একটা connection পাওয়া যায়। সেই জিনিসটা, তুই বলতে পারিস যে, proper noun এসেছে এবং সেইখান থেকে আমরা কিছু কিছু জিনিসে পৌঁছে যেতে পেরেছি, যেগুলো খুব নতুন রকমের।

এইটা ওরা পেরেছে কারণ ওরা একদম সবকিছু absorb করে নিয়ে —

আমার নিজের মনে হয় যে চন্দ্রবিন্দু একটা sponge-এর মত।
যা হচ্ছে চারপাশে, সেগুলোকে খুব ভালো করে লক্ষ্য করে। এবং শুধু লক্ষ্য করা নয়,দেখবি যে খুব সাধারণ ঘটনা, যে ঘটনাগুলোকে আমরা একদম খেয়াল করিনা, সেগুলো গানের মধ্যে আশ্চর্য ভাবে এসেছে। আমার এক্ষুনি যে গানটার কথা মনে পড়ছে —
“ভিনদেশী তারা” থেকে “তুমি মায়ের মতই ভালো”। এই কথাটা মানুষ —

প্রচন্ড selfless একটা ব্যাপার —

এই জায়গাটা আশ্চর্য না ? এই জিনিসগুলো তো (গানে) হয় না। আবার অন্যদিকে আর একটা সেই ভালোবাসা নিয়ে গান, সেখানে বলছে
“সব ভালোবাসা ভুলে বড় হব কালকে”।
এই কথাটার মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। একদম সিম্পল কথা মজা করে বলছে। কিন্তু এই কথাটার মধ্যে যে actual inner meaning, সেটা কিন্তু অনেক serious একটা deep emotion থেকে আসছে —
“অনেক হয়েছে ভালোবাসা, কালকে বড় হয়ে যাব। ধুর, এইসব কাটাও!”

এইরকম একটা feeling কিন্তু আরও একটা গানে পাই। যেমন “জুজু” album-এ একটা গান ছিল যার একটা লাইন এরকম ছিল —
“কি আর করব বল সখী,বুঝেছি প্রেম — টেম সবই বুজরুকি”।
এই যে crisis-গুলো, এই আটপৌরে ব্যাপারগুলো একটা সম্পর্কের মধ্যে।
একটা জায়গায় ছিল, একজন চাকরি করছে। সে প্রেমও করছে। এবং দুটোকে সামলে উঠতে পারছে না। Brigade-এ প্রচুর ভিড় হয়েছে। সেইখানে যানজট। আমি দৌড়োচ্ছি। আমি office দেরি করে পৌঁছলাম। Boss আমার ওপর চেঁচাচ্ছে। আমার বাকি কাজটা গোটাতে হবে। তোমার সাথে দেখা করার কোনো scene-ই নেই।
এটা “Office Time” বলে একটা গান ছিল।
এই crisis-গুলো কিন্তু ভীষণ important, যেগুলো actually drive করে সবাইকে। আর যেমন একটা হতাশা। না বলে বলে ওই রকমই তো একটা ব্যাপার —
“খুব ভালো লাগত — বলতে পারলাম না — সে চলে গেল — কেন গেল? আহা!”
তুমি তো বলনি প্রথমে!

যেটা বাঙালি মধ্যবিত্ত ছেলেদের common syndrome। *বেশি হয়ে গেল, না?*

“হয়তো বা কোনোদিন সে সাহস ফিরে পাব আগামীর কোনো সংখ্যায়। এভাবেও ফিরে আসা যায়।” এইটার মধ্যেও কিন্তু নিজের একটা insecurity এই গানটার মধ্যে (আমার মনে হয়) খুব ভালো ভাবে এসেছে। আর যেমন কিছু একটা খুব emotional কিছু হয়ে গেল। ঝগড়া হলো। অন্য পাড়ায় গিয়ে কাঁদছে।
“এ বাবা! বেপারায় কেঁদো না! এ মা! ছিঃ ছিঃ!”

প্রেমে পড়া, টিকে থাকা, তার যে ঘটনাগুলো, রোজকার ঘটনাগুলো, (basic emotion, basic feeling) সেই জায়গাগুলো গানের মধ্যে এসেছে।
“মঙ্গলগ্রহ” গানটা শুরু হচ্ছে — একটা নতুন বিষয়৷ নানান রকমের opportunity। মঙ্গলগ্রহে মানুষ নেই। মানুষের সাথে সাথে যে যে ঘটনা ঘটে গেছে, এতদিনের civilization — সেখানে revolution, deconstruction সব রয়েছে, সে সব কিচ্ছু নেই। শিল্প আছে সমঝোতা নেই, খুব ভালো কথা। সবেতে খুব রাজি।
কিন্তু শেষে গিয়ে যেটা করছে, সেটা চমৎকার!
সেখানে গিয়ে বলছে, “নেই nudist colony”।
সেটা যেই বলে দিচ্ছে, ব্যাস! তারপর সব মানুষই কিন্তু — “আমি যাবো না!” — আর যাবেনা। এই যে জায়গাটা। তার মানে
মানুষের basic জায়গাটা কোথায়? সেই জিনিসটা মানুষ কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় কিছুতেই admit করে না। এটা কিন্তু সবচেয়ে interesting। স্বাভাবিক অবস্থায় যে মানুষের যৌনতাটা চায়, মানুষ যৌনতা ছাড়া যে থাকতে পারে না, এটা কেউ কোনোদিন স্বীকার করতে চায় না। কিন্তু আসলে এটাই এবং এটাই যে গানের মধ্যে দিয়ে বলা, এটা চমৎকার! “মঙ্গলগ্রহ” গানটার কথা ওইজন্য আমার বড্ড বলতে ইচ্ছে করে। এই একটা বিষয় নিয়ে গান করতে করতে কোথায় চলে গেল!
গানের শেষে গিয়ে আসল জায়গাটাকে ধরালো —
এইটা হচ্ছে তোমার basic desire, তুমি এটার জন্যই কিন্তু আসলে ছটফট করছ।

এই যে গানের শেষে এলো, আবার একটা গান এরকম আছে, basic desire-টা একদম গানের শুরুতে ঢুকে গেছে। “যদি ভাবো পাবে, তাকে যদি ভাবো পাবে”। তারপরে হঠাৎ করে চলে গেল “যদি ভাবো খাবে তার গালে চুমু খাবে”।
একদম!

এইগুলোর সাথে আসলে আমি যেটা relate করতে পারি — আমাদের যে mediocrity-গুলো, যে মানসিকতাগুলো।
“আমরা বাঙালি জাতি” গানটার কথা মনে পড়লে, তুই বুঝতে পারবি গানের কথাগুলো কী। এবং সেই গানটা লেখার উদ্দেশ্যটা কী। যাদের actually mean করছে গানটায়, আমি সেটায় পৌঁছয়নি। কিন্তু আমি তাদের দেখতে পাই।
এখন মনে হয় আসলে বেশি করে যে চন্দ্রবিন্দু actually কিছু কিছু জায়গায়, এই ধরণের গানের ক্ষেত্রে, মধ্যবিত্তর আয়না। একদম মধ্যবিত্তকে দেখাচ্ছে চোখের সামনে যে “
এইটা হচ্ছে তুমি। তুমি গান শুনছো, মজা পাচ্ছ। খুব ভালো কথা! কিন্তু তুমি কিন্তু নিজেকেও দেখতে পাচ্ছ। খুব হাততালি দিচ্ছ, আনন্দ পাচ্ছ। কিন্তু তুমি যদি একটু ভাবো। নিজেকে নিয়েই মজা পাচ্ছ।” হয়তো সেটা শুনে খুব নিজেকে নিজে বদলে ফেলবে এমনটা দাবি করছে না।
ওরা যে সমাজ বদলে দেবে (তা নয়)! এটা খুব interesting।

যেমন একটা জায়গায় ছিল, একটা গানে,
“শুরুর খানিক মৃণাল-মানিক, অন্তে সুভাষ ঘাই”।
তুমি প্রথমে প্রচুর কপচাবে, শেষে ওই normal mainstream-এই চলে যাবে। এবার ধর প্রেমের মধ্যে যখন একটা বিরহের ব্যাপার —
“পাঁজর ভাঙার ধাত” যদি তোমার থাকে তাহলে শুধু “রবীন ঠাকুর নাথ”ই তোমায় বাঁচাতে পারবে।
যেমন ধর MBA নিয়ে বলেছে, on-site যাওয়া নিয়ে বলেছে, বড্ড বেশি ঝলমলাচ্ছ তুমি! একতলায় লিফটে ওঠো? ইয়ার্কি মারছ তুমি! একদিন হয়তো ভুল করে গেয়েও ফেলব। যেদিন খুব রাগ হবে কিছু (নিয়ে)। আমি একদিন গেয়ে ফেলব।
ওই যে একটা তেলতেলে বাঁশের একটা গল্প আছে। সে তেলও দিচ্ছে, বাঁশও দিচ্ছে। শেষ অব্দি promotion-টাও হয়ে যাচ্ছে।

এই বিষয়টায় না আমি বোকা বনে যাই। বারবার।
যেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম একটু আগে, সেখানে আমরা দেখছি চারিদিকে যা হচ্ছে সেগুলোকে নিয়ে মজা করা, খুব বোকা বোকা জিনিসগুলোকে ভালো করে observe করে সেগুলোকে গানের মধ্যে আনা। সে চমৎকার! দারুণ! ভীষণ ভালো লাগে। তারপর এরাই যখন প্রেমের গান করে তখন বিশ্বাস করা কঠিন হয় যে এরাই এই প্রেমের গানগুলো করেছে! এদের মধ্যে এই অনুভূতিও আছে!

নিজেদের আলাদা আলাদা style আছে।

যারা এত practical-ভাবে দেখে তারা আবার ভালবাসাটাকেও এত ভালো করে অনুভব করে! কেন বলছি? চন্দ্রবিন্দুর প্রেমের গানে আমি যেটা সব চেয়ে বেশি করে পাই — একটা আশ্চর্য মায়া আছে। বিশাল বড় বড় কথা নেই। আছে যেগুলো সেগুলো হচ্ছে একেবারে খুব simple ভালোবাসাটা। আমার নিজের আবার ভালবাসতে ইচ্ছে করে ওই গানগুলো এখনও শুনলে।
তার মধ্যে মনে হয় যে গানটা খুব famous, “মন”। গরিব প্রেম। যে প্রেমের মধ্যে ঐশ্বর্য নেই সেইরকমের। কিন্তু তা সত্ত্বেও কত সুন্দর! আমরা সেই জায়গা থেকে belong করি, এতটা relate করতে পারি।

“ডাকনাম” album-এর “সেই হাওয়া” গানটা। সেখানেও প্রেমকে অন্যরকমভাবে define করা হয়েছে।
আমাদের popular culture-এ প্রেমের definition-টাকে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। কিছুদিন আগে একটা cinema বেরিয়েছে। প্রথমে আমার doubt ছিল যে ওটা কি সত্যিই প্রেম দেখাচ্ছে? হচ্ছেটা কি! লোকে খাচ্ছে কেন?
পরবর্তীকালে যে cinema-র director, প্রেমের definition ও set করে দিচ্ছে। ও একদম কোনো ভণিতা না করে বলছে,
প্রেম হচ্ছে সেই রকম একটা সম্পর্ক, যেখানে যে আর একজন সম্পর্কে আছে, তাকে আমি যখন খুশি, যেখানে খুশি, যেভাবে খুশি, আমি তাকে চড় মারতে পারি, গালাগাল করতে পারি, abuse করতে পারি। সে আমার সম্পত্তি।
এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কিন্তু চন্দ্রবিন্দুর প্রেম ভীষণ প্রাসঙ্গিক। ধরে রাখার মত।

হ্যাঁ, আসলে আমাদের হয়তো চন্দ্রবিন্দুর বিষয়ের সাথে এই কথাগুলো বলার কথা নয় কিন্তু তুই বলেছিস খুব প্রাসঙ্গিকভাবেই বলেছিস। আমার যেটা মনে হয়েছে যে এটার কারণ —
তুই বলছিস প্রেমের definition ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আমার মনে হয় না সেটা।
আমার মনে হচ্ছে এখনকার সময়টা বোধহয় এরকমই। অসুখটা তো বেশি। মানসিকভাবে তো অনেক depressed। অনেক কিছু না পাওয়া। সেটা বোধহয় তার প্রেমেতেও reflect হচ্ছে। ব্যাপারটা (abuse করাটা) তার basic nature হয়ে গিয়েছে।
সেই জন্যই বোধহয় এরকম ছবি হচ্ছে এবং সেই ছবিগুলোর সাথে মানুষ relate করতে পারছে। এটাকে তুই কিন্তু অস্বীকার করতে পারিস না।
ছবিটা দেখে লোকজন সেগুলোতে inspired হয়ে সেরকম করবে কিনা সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি জানি না সে কি করবে। সেটা তার নিজের শিক্ষার ওপর depend করছে। কিন্তু সময়টা হয়তো এরকম হয়েছে।
সে ছবি বানিয়েছে সেরকম।
প্রেম ওটা হয় না। প্রেম তো মারপিট,গালাগাল (না)। ঝগড়াঝাটি হতে পারে কিন্তু গালাগাল মারপিট-টা? মারপিট প্রেমের মধ্যে হলে তো — আমি জানি না। আমি হয়তো এখনো ব্যাপারটার সঙ্গে relate করতে পারিনি। কিছু মানুষ করেছে বলেই তো ছবিটা চলছে। কিন্তু চন্দ্রবিন্দু অন্য প্রেম করেছে। সেই প্রেমটার সাথে আমি relate করতে পারি।

একটা দল সবার কাপড়চোপড় খুলতে ব্যস্ত, সে আবার প্রেমও করছে?

এটা নিয়ে তো একটা — সাংঘাতিক আশ্চর্য প্রশ্ন।
বিশ্বাস করতে একটু কঠিন হবে কারণ চন্দ্রিলের interview দেখলে মনে হয়, এই ছেলে তো সারাক্ষণ practical কথা বলে। এ আবার প্রেম কি করবে? যখন চন্দ্রবিন্দুর প্রেমের গান শুনেছি, বোকা বনেছি। চন্দ্রিল তো আমাকে আরো বোকা বানিয়েছে। যবে আমি প্রথম জানলাম যে চন্দ্রিলের লেখা প্রথম প্রেমের গান “আদরের নৌকা”। উপল বা অনিন্দ্য বলেছিল, তুই এই গানটা লিখেছিস, এই গান লেখার পেছনের গল্পটা বল। সেখানে চন্দ্রিল বলছে, আসলে কি হয়েছে জানিস তো, ওই আমি “চ” album অব্দি গান লিখতে লিখতে দেখলাম, যে সব গান লিখেছি, সেগুলোতে লোকে দেদার মজা পাচ্ছে। হাততালি দিচ্ছে। ‘চমৎকার’ বলছে। কিন্তু দেখছি মহিলা fan following অনিন্দ্যর মতো আমার কিছুতেই হচ্ছে না। তখন আমি ভাবলাম। তোরা বললি একটা প্রেমের গান লিখতে হবে। তোরা দিয়েছিলি। আমি তখনই একটু খেটেখুটে “আদরের নৌকা”-টা বানালাম। যদিও তাতে পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি, কিন্তু হয়ে গেছে (গানটা)।
মানে এই যে ব্যাপারটা। এটা সত্যি বিশ্বাস করা কঠিন হয়। যে কোনো চন্দ্রিলের গান, চন্দ্রিলের যে satire, যে humor, সেই জায়গা থেকে ওরকম প্রেম! “আদরের নৌকা”-র মতো গান কি করে লেখে?

প্রেমের মতই ব্যাপারটা। কিছু sentiment আছে ওদের বন্ধুত্বের গানের মধ্যে।
যেমন ধর, “বন্ধু তোমায়”।
চন্দ্রবিন্দুর গান সেভাবে সে শোনে না কিন্তু তাকে যদি বলিস, আচ্ছা বাংলা কোনো একটা গান তুমি আমায় শোনাও যেটা বন্ধুত্ব নিয়ে, সে হয়তো “বন্ধু তোমায়” গানটাই তোকে শোনাবে।
যেমন আর একটা গান ছিল — “আড্ডা”। সেটাও খুব সুন্দর একটা বন্ধুত্বের গান। এই ধরনের গানগুলো লিখেছে যেরকম বললাম।
ওদের সুরগুলো কিন্তু খুব অন্যরকম।

আসলে প্রথমদিকের যে গানগুলো চন্দ্রবিন্দু করেছে, সেই গানগুলোর সুরের মধ্যে একটা মজা আছে এবং তারপরে আমার কিছু কিছু জায়গায় আশ্চর্য confusion হয়েছে।
কিছু গান আছে, হয়তো তুইও জানিস। খুব popular কিছু গান। সেই গানের সুর একেবারে ditto! এমনিতে reference-এর জায়গা থেকে ওদের music-এ inspiration থাকতে পারে কিন্তু আমি ditto copy করার ব্যাপারটাকে বুঝতে চেয়েছি। এরা ditto copy করছে এরকম একটা music! যে band-টা আমার কাছে এতটা অন্যরকম!
তখনকার মতো সত্যি ওরম মনে হয়েছে যে, “চুরি করল তো!”।
তারপর একটা গানের reference-এ গিয়ে আমার আশ্চর্য লাগছে। Bob Marley-এর গান। সেই Bob Marley-এর গানের খুব famous একটা সুর। আমার মনে পড়ছে না।

ওই “Buffalo Soldier”! এবং একটা জায়গায় “Buffalo Soldier” বলে গানটা শেষ হয়ে গিয়েছে।

Exactly! এই জায়গাটায় গিয়ে আবার আমার তখন মনে হচ্ছে, সত্যিকারের এতটাই শয়তান! মজা করে গান লিখছে, সুর copy করছে, করে আবার বলেও দিচ্ছে। দিয়ে বলছে, দেখ তুই কি ভাববি, চুরি ভাববি না ইয়ার্কি ভাবি? বুঝে নে!

একটা ভিডিও আছে যেখানে “Ode to Joy” নিয়েও গল্প করছে।

হ্যাঁ, “Ode to Joy”-এর গল্পটা!
বলছে, আমরা যখন “গীত গোবিন্দ” করেছিলাম, (লোকে ভাবছে) জয়দেব পড়ে! আবার যখন “Ode to Joy” করছি, তখন, “দেখেছ, চন্দ্রবিন্দু কত শিক্ষিত!” জয়দেবও পড়ে আবার western classical-ও শোনে।
এই জায়গাগুলো কিন্তু ওরা বলে দিয়েছে। আমার কাছে ওই প্রথম confusion-টা আর নেই। কারণ আমি বুঝেছি যে ওরা সত্যি কি mean করে করছে জিনিসগুলো।

এটা ভীষণ confusing তার কারণ হচ্ছে একই album-এর একটা গান যেরকম “Buffalo Soldier” থেকে, যেটা বললি, “একটি মুরগি”। সেখানে তো একদম শেষে গিয়ে বলছে “Buffalo Soldier”? সেই album-এরই যে main track, “ত্বকের যত্ন নিন”, সেটাও তো একটা গান থেকে নেওয়া। এবং সেটার কিন্তু শেষে কিছু বলছে না যে এটা কিন্তু “Johnny B. Goode”।

একটা band যদি music বানিয়ে কোথাও বলে দেয় এবং খুব famous গান থেকে নিচ্ছে যেটা খুব সহজে ধরতে পারবে লোকজন, তারপর প্রশ্নটা হচ্ছে অনেকে ভাবতে পারে,
“কেন নেবে? নেওয়ার তো দরকার নেই।” নিজেরা সুর করবে, গান করবে।
এবার প্রত্যেকটা কে ধরে ধরে mention করেনি। কিছু mention করেছে। তুমি তার থেকে যা বোঝার বুঝে নাও।

হ্যাঁ মানে ওটা একটু problem হয়ে যায়।
Controversy-তে না গিয়েও যদি আমি বলি, আমাদের initially যেটা নিয়ে উঠেছিল কথাটা। “চন্দ্রবিন্দু নয়” নিয়ে। এবার “নয়” এর সুর যদি বলি, আমাদের সবার একটা idea ছিল যে চন্দ্রবিন্দুর মোটামুটি গানের সুর এক ধরনের হয়। কিন্তু “নয়” এর ক্ষেত্রে music-টা পুরোপুরি আলাদা। গান শুরু হলে বোঝাই যায় না ওটা চন্দ্রবিন্দুর গান।

ঠিক এই জায়গা থেকে, “চন্দ্রবিন্দু নয়” শোনার পরে,
আমি যদি “চন্দ্রবিন্দু নয়” দিয়ে চন্দ্রবিন্দু কে কারুর কাছে introduce করি, সেখানে কিন্তু ব্যাপারটা একদম অন্যরকম হবে। সে চন্দ্রবিন্দুকে কিন্তু অন্যরকম ভাবে চিনবে! হয়তো পুরোনো গানগুলো শুনবে, বুঝতে পারবে। কিন্তু প্রথম চন্দ্রবিন্দুর যে impression, সেটা একদম নতুন (হবে)।
আমিও চন্দ্রবিন্দুকে (“নয়”-কে) সেই ভাবে হয়তো accept করতে পারিনি প্রথমবার শুনে। কারণ আমার কাছে চন্দ্রবিন্দু একটা idea হয়ে ছিল। কিন্তু “চন্দ্রবিন্দু নয়” সেই জায়গাটাকে আশ্চর্যভাবে অন্যরকম করেছে।

শুধু সুরের দিক থেকেও না। আমার মনে হয় কিছু গান আছে যেগুলোর কথাগুলোও অন্যরকম।

একটা গানের কথা এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, “হৃদয়”।
“হৃদয়” যে গানটা “চন্দ্রবিন্দু নয়” album-এর,
প্রথমবার যখন শুনেছিলাম, কিছু কিছু শব্দ আছে যে শব্দগুলো শোনা যায় না। যা তা! সেগুলো শুনে মনে হয়েছে,
“কি করেছে! এরা করতে করতে কি যা ইচ্ছে তাই বলবে?!”
কিন্তু আমার ওই গানের একটা কথা খুব কানে লেগেছিল। একটা জায়গাছিল না —
“পেছন তোলা নাচ”? এরকম কিছু একটা কথা ছিল।

“আমার মিথ্যুক ভিখিরী, আমার পেছন তোলা নাচ”।

হ্যাঁ, এবার ওই কথাটা কেন বলছে? কিছু বুঝতে পারিনি। সত্যি কিছু বুঝিনি।
একদিন বাসে করে যাচ্ছি। বিবেকানন্দ রোডের মুখে ওই বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে যে ফুটপাত, ওখানে কিছু মানুষ থাকে। তাদেরই কয়েকটা বাচ্চা-কাচ্চা, তারা ওই খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পড়ে, ওরা নিজেরা গান গাইছে, সেই গানের সাথে নিজেরা নাচছে। মানে অবাধ নাচ নাচছে আর কি। সেখানে রাস্তায় আশেপাশে কে দেখছে, কিছু নেই।
সেই নাচটা দেখে আমার তখন মনে হচ্ছে, “হ্যাঁ, সত্যিই তো!”
তারপর হৃদয় গানটা আবার শুনি। হৃদয় গানটা তখন আমার কাছে যে আসে —
আমি যে তখন বলছিলাম না “sponge-এর মত” কথাটা? সেটার পেছনে মস্ত বড় realization। এই গানটায় বলছে যে আমার হৃদয়কে আমি জানলার পাশে রেখে দিয়েছি। যা আসছে আশপাশ থেকে, যাবতীয়, সেগুলো সব আমি absorb করছি।

কিছু কিছু album, concept album (হয়)। সুরের central একটা theme থাকে, lyrics-এর মধ্যে একটা গল্প থাকে। প্রথম গান থেকে শেষ গান অব্দি একটাই central theme নিয়ে চলে।
কোনো theme ওদের কোনো album-এই applied নয়।

ওরা তো নিজেরা বলেছে, স্বীকার করেছে, “আমরা এবড়োখেবড়ো পথই বেছে নিয়েছি”।

“চন্দ্রবিন্দু নয়” হয়তো চন্দ্রবিন্দুর প্রথম concept album।
তার কারণ হচ্ছে যে সুরের একটা experiment আমরা দেখে যাচ্ছি। ওইরকম ভাবে একদম শেষ গানটা, “কে নিল তার রূপ”। ওই একটা গান গোটা album-টাকে একটা পূর্ণতা দিয়েছে। একটা theater হচ্ছে ওখানে!
ওটা শুনেই প্রথম যে গানটার feel আসছে, সেটা হচ্ছে “Bohemian Rhapsody”। শুনলেই মনে হয় যে অনেকটা ওইরকম গোছের।
আরও একটা খুব হালফিলের গান আছে। সেটা হচ্ছে “বেমানান”-এর “হাউল স্কুল” বলে একটা গান। সেখানেও কিন্তু ভীষণ theatrical —

আসলে আমার কাছে এই গানটার আর একটা দিক হচ্ছে — তুই গানটা কিভাবে হয়েছে, এই theatrical ব্যাপারটাতে যতটা নতুনত্ব পাচ্ছিস কিন্তু আমার কাছে গানের বিষয়টাও ভয়ঙ্কর অন্যরকম-এর।
চন্দ্রবিন্দু সাধারণত serious কথাবার্তা বলেছে, মজার ছলে বলেছে, আমি সব স্বীকার করছি। এখানে কিন্তু কোনো মজা নেই। গোটা গানটার মধ্যে কোথাও ইয়ার্কি নেই। এবং একটা ভীষণ dark বিষয় নিয়ে গান।
একটা প্রত্যক্ষ abuse দেখতে পাচ্ছি। সেই abuse-টা কার? মহিলাদের না আমার পৃথিবীর? আমরা কাকে abuse করছি? গুলিয়ে যাচ্ছে। এক মনে হচ্ছে। এরকম একটা গান চন্দ্রবিন্দুর শেষ গান। মানে album হিসেবে published শেষ গান। শুরু করেছিলাম “চন্দ্রবিন্দু নয়” কে একভাবে। শেষে গিয়ে “চন্দ্রবিন্দু নয়” আমার কাছে কি হয়ে দাঁড়ালো সেটা এই গানটা শোনার পর হচ্ছে। যেটা তুই বলছিস যে পুরো album-টাকে পূর্ণতা তো দিচ্ছে এবং এর একটা অন্য value আছে।

আসলে লোকজন ওটাই expect করে যায়। “আপনাদের এই album-টা” — বলেছে interview-তে, না?

Exactly! ওই তো। মানে ওই জিনিসটা খুব common যে
“এই album-টা না একেবারে আগের মত হয়েছে”।
নতুন album আগের মতোই যদি হল তাহলে আর নতুন album কি হল? এই ঘটনা share করেছে। আমাদের সমস্যা বলবো কি জানিনা, একটা expectation এইরকম ভাবেই তৈরি হয়। সেখানে “চন্দ্রবিন্দু নয়” করছে, একদম নতুন! এবং আমরা জানি “চন্দ্রবিন্দু নয়”-এর mass acceptance কিরকম হয়েছিল। সেটা যে আগের album-গুলোর মত “হই-হই-hit!”, “দারুন!” (তা নয়)।

আমার মনে হয় যে ভালো জিনিস, যত দেরিতেই হোক না কেন, একদিন না একদিন গিয়ে — সেটা তুই যেরকম বললি, যখন প্রথমবার শুনেছিলি “চন্দ্রবিন্দু নয়” তখন কেমন একটা লেগেছে,
“এটা তো চন্দ্রবিন্দু নয়ই!”।
এটা চন্দ্রবিন্দু নয়, এটা “চন্দ্রবিন্দু নয়”।

এটা কিন্তু বারবার হয়েছে। চন্দ্রবিন্দুর ক্ষেত্রে (শুধু) নয়। বার বার হয়েছে, তারা যখন নতুন কিছু করেছে তখন কিন্তু সেই জিনিস কদর পায়নি। অনেক পরে গিয়ে সেটা হয়েছে।

“চন্দ্রবিন্দু নয়” এর জন্য ওরা award পেয়েছে। কিন্তু সেটা ওই ধরনের award পায়নি যে ভীষণ successful (ব্যবসায়িক)।

হ্যাঁ, ওই একটি হিসেব থাকে না? চন্দ্রবিন্দুর আগের album-গুলো বিক্রির দিক থেকে খুব বেশি ছিল। Gold/Platinum disc না এরকম কিছু হয়। সেই একটা comparison-এর জায়গায় হয়তো এই album-টা সেই জায়গায় যায়নি।

আমি ঠিক জানিনা যে চন্দ্রবিন্দুর যে দশ নম্বর album, যদি বেড়োয়, কিভাবে approach করবে। কারণ তৃপ্তির ব্যাপার আছে যে ওরা সত্যিই experiment করেছে এবং সেটা অন্য রকম একটা award পেয়েছে। কিন্তু একটা অতৃপ্তির ব্যাপারও থেকে যায় (শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া)। কোন balance-টা ওরা maintain করবে?

আমার এই বিষয়ে মনে হয় যে চন্দ্রবিন্দু নয় হয়েই থাকুক।

দশটা দশের মত হোক?

দশটা দশের মত হোক, নতুন কিছু হোক।

নয় যখন release করেছিল, তুই যদি ভেবে দেখিস আর এখন, অনেকটা gap। এখন কিভাবে আমরা consume করছি নতুন গান, সেটাও কিন্তু অনেক পাল্টে গেছে।

অবশ্যই!

যে কারণে এখন আর ওই কেও physical disc হয়তো কিনবে না। সে হয়তো কোনো subscription medium-এ শুনবে, YouTube-এ শুনবে, কিন্তু শুনবে।

এই যে platform-এর কথা বলছিস না, এখন সত্যি platform এত রকমের হয়েছে Internet-এর রমরমা-তে। যখন প্রথমে গান করেছে, চন্দ্রবিন্দুর কাছে তখন কিন্তু এগুলো ছিল না। চন্দ্রবিন্দুকে কিন্তু producer-এর কাছে ঘুরতে হয়েছে তাদের album release করার জন্য। এবং চন্দ্রবিন্দু প্রথম দিনই তো চন্দ্রবিন্দুর মত এত নামী নয়। কিছু নতুন ছেলে, তারা আলাদা করেও যে খুব নামী শিল্পী, individually, তাও নয়। সব নতুন।
এবং তারা গানও করে এই রকম!
গানের কথার মানে বুঝতে একটু সময় লাগবে,
প্রথমবার শুনে কেউ মানে বুঝবে না
কিন্তু আবার কখনো মনে হতে পারে,
এর ভেতরেও জিনিসপত্র আছে!
তারা ওইরম গান করছে, সেই গান producer-রা finance করছে, সেটাও কিন্তু একটা খুব উল্লেখযোগ্য বিষয়।

আজকে এত বেশি medium হয়ে গেছে চারপাশে। SoundCloud-এ দিয়ে দিল। কেউ চাইলে YouTube-এ দিয়ে দিল। সেভাবে তো হচ্ছে।

কিন্তু সেখানেও আরেকটা কথা আবার সঙ্গে সঙ্গে খুব স্বাভাবিকভাবে চলে আসে। সেটা গানের quality-র উপর কী reflection আনবে সেটা কিন্তু আমরা বলতে পারি না। হয়তো খুব ভালো হতে পারে। লোকে নিশ্চিন্তে নিজের মতো করে গান করতে পারবে। সেটা যেমন positively বলতে পারিস সেরকমই কিন্ত সেটার একটা negative effect-ও থাকে।

আজকে ২০১৯-এ চন্দ্রবিন্দুর পরে আমার বেমানান-এর কথা মনে হয়।
“Sayatya & Friends” বলে নতুন একটা চ্যানেল।
এই যে rooftop concert যেগুলো হয়।
“প্রিয় গান” বলে একটা গান আছে —

Independent music হচ্ছে আর কি।

এইটা কিন্তু আমার মনে হয় অনেক বেশি hopeful একটা ব্যাপার। আমার সত্যি —

Hopeful বলছিস বটে কিন্তু সাথে আমি যেটা দেখছি সেটা তো অস্বীকার করতে পারি না। আমি একটা গান যখন independent music হিসেবেই শুনেছিলাম, আমি জানি আশেপাশের কতজন শুনেছিল। সেই গানটাই যখন একটা ছবিতে ব্যবহার হল তারপর দেখলাম লোকের মুখে মুখে গানটা ঘুরছে। দেখে ভালো লাগলো না তাদের খুব পছন্দের নায়ক গানটা গেয়েছে বলে ভালো লাগলো? আমি জানি না। আমি (সেই) বিষয়ে যাচ্ছি না। কিন্তু তার মানে কী? তুই যে hopeful বলছিস, hopeful হয়তো আমিও। এটা কিন্তু সত্যি, এই সত্যিটাকে কিন্তু তুই অস্বীকার করতে পারিস না।
গানটা যখন ছিল, SoundCloud-এ ছিল বা এরকম জায়গায় ছিল, লোকজন শুনেছে। কিন্তু এই যে গানের কথা লিখেছে, সুর করেছে, নিজের মতো করে করেছে, নতুন কিছু করেছে, শ্রোতাদের কাছে এমনিই পৌঁছবে।
কিন্তু সে পৌঁছতে কিন্তু পারছে না। তার ছবির মাধ্যম দরকার পড়ছে। এই জন্যই বলছি। তুই একজন কাউকে জিজ্ঞেস কর, এই গানটা গাইছে বা গেয়েছে, খুব ভালো লেগেছে, status দিয়েছে গানের কথা দিয়ে। জানে যে গানটা কে লিখেছে?
“অনির্বাণ গেয়েছে”। এই ভাবেই চিনে রেখেছে গানটাকে।

সেই identify-র একটা হয়তো crisis হয়। এবার কেউ যদি সত্যি জানতে চায়, সে হয়তো গিয়ে দেখবে যে আচ্ছা —

আমি একটা গান বানালাম। লোকজন শুনছেও কিন্তু আমাকেই জানছে না।

এই যে independent লোকজন গান করবে বা গান করছে তাদের একটা platform দেওয়াটা ভীষণ জরুরী। আবার “Sofar” বলে একটা group আছে। এটার আসার অনেক আগে বোধহয় উপল already “আমাদের ছাদে” শুরু করে দিয়েছিল। এবং এরপরে ঋতম সেনও কিন্তু নিজের মত করে independent music-টা promote করছে, তার নিজের —

একটা তো platform দরকার, public-এর কাছে পৌঁছবে।

এই ভাবেই এগোতে থাকবে হয়তো। জানি না এবার চন্দ্রবিন্দু —

হবে। চন্দ্রবিন্দু দশ আসছে।

এটুকু আমরা জানি।

এই episode-টা পাঁচ ভাগে দেখতে পারো subtitles দিয়ে। Closed Captions (CC)-এ পাবে।

এই episode বিষয়ক আরও কিছু জানা আছে কি? আমাদের mail করে পাঠাও!

📧 mail@triangularvishon.com

--

--

Triangular Vishon
0 Followers

A podcast in Bengali on things we love and ideas we care about. www.triangularvishon.com